logo

হোসেনপুরে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে হুমকির মুখে প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ শতাধিক ঘরবাড়ি

মো: খায়রুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:
ব্রহ্মপুত্র নদের অব্যাহত ভাঙনে কয়েকদিনে হোসেনপুর উপজেলার সাহেবেরচর গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। প্রতিদিনই ঘরবাড়ি, ফসলি জমি,কবরস্থান ও বাঁশঝাড় নদীতে বিলীন হচ্ছে। চরাঞ্চলের একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শুলু শাহর মাজার, কবরস্থান, মসজিদসহ আরও শতাধিক বাড়িঘর ভাঙনের মুখে রয়েছে।
ইতোমধ্যে গ্রামের বিস্তর্ণ এলাকা নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। ফলে অনেক পরিবার এখন ভিটে মাটি ছাড়া। এলাকাবাসী জানান, জমি, সহায়-সম্বল, ঘরবাড়ি হারিয়ে তারা এখন দিশেহারা। কেউ পাগল প্রায় আবার কেউ কেউ ভিটে বাড়ি হারিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। যারা গ্রামে রয়ে গেছে ঝুঁকি, আতঙ্ক আর হতাশাই এখন তাদের নিত্যসঙ্গী।
সপ্তাহখানেক ধরে আবার নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে গ্রামটিতে। এলাকার একমাত্র সাহেবের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বন্যার্তদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্রটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। নদের পানিতে আগেই চলে গেছে স্কুলের টয়লেট। পশ্চিম দিকে দেখা দিয়েছে ফাটল। শিক্ষকরা এ ভবনে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে সাহস পাচ্ছেন না। বুধবার থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড বালির বস্তা ফেলে বিদ্যালয়টি রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এলাকাবাসী বলছে, কেবল স্কুল নয়, মানুষের বসতবাড়ি, জমিজমা রক্ষা করাও সরকারের দায়িত্ব। এলাকায় মানুষ না থাকলে স্কুল দিয়ে কী হবে! এখানে পড়বে কারা!
সরেজমিনে হোসেনপুরের সিদলা ইউনিয়নের ভাঙনকবলিত সাহেবেরচর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় প্রায় আড়াই কিলোমিটার ভাঙনে বিলীন হওয়ার দৃশ্য, ব্রহ্মপুত্র নদটি বাঁক নিয়ে গ্রামের ভেতরে ঢুকে গেছে। স্থানীয়রা মনে করছে, এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে গ্রামটি। যার শত কাঠা জমি ছিল, তিনিও আজ ভূমিহীন। একসময়ের সচ্ছল কৃষক কামলা খাটে, নৌকা চালায়। কেউ কেউ এলাকা ছেড়ে শহরে গিয়ে রিকশা চালাচ্ছে। কেউ আবার পরিবার পরিজন নিয়ে ইটভাটায় শ্রম বিক্রি করছে।’ এভাবেই আক্ষেপ করে কথাগুলি বলেছেন সিদলা ইউপি চেয়ারম্যান  মো. সিরাজ উদ্দিন।
নদের ভাঙন থেকে বসতঘর রক্ষা করতে তিনবার সরিয়েও এলাকার মোক্তার উদ্দিন ও আমেনা আক্তার শেষ রক্ষা পায়নি। নিরুপায় হয়ে তার এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকেই জায়গা না পেয়ে সরকারি রাস্তায়ও আশ্রয় নিয়েছেন।
জীবন-জীবিকা নিয়ে সংকটে থাকা রিয়াজ উদ্দিন জানান, তাঁদের ৪০ কাঠা জমি ছিল। সবই চলে গেছে ব্রহ্মপুত্রের পেটে। এখন তিনি অন্যের জমিতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ গ্রামের রবি মিয়া, নুরুল ইসলাম, জুয়েল মিয়া, বাক্কার মিয়া, বাহার উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন, আল-আমিন, মুকসুদ মিয়া, হাবিুবর রহমানের ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে যায় নদীগর্ভে। ওরা এখন প্রতিবেশী ও স্বজনদের জায়গায় ঘর তৈরি করে কোনো রকমে দিন যাপন করছেন। এছাড়া, ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি, জমিজমা নদীতে চলে যাওয়ায় জলিল মিয়া, স্বপন মিয়া ও শাহজাহান মিয়া এলাকা ছেড়ে পাশের ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও এলাকায় বসবাস করছেন।

Comments are closed.







প্রধান সম্পাদক : ফজলুল হক জোয়ারদার আলমগীর, সহ-সম্পাদক : দেলোয়ার হোসেন শরীফ।
বার্তা সম্পাদক - মাসুম পাঠান, প্রধান কার্যালয়: ১৩/এ মনেশ্বর রোড, হাজারিবাগ, ঢাকা- বাংলাদেশ।
জোনাল অফিস: বাংলাদেশ কম্পিউটার এন্ড টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট, কটিয়াদী বাজার (অগ্রনী ব্যাংক নিচতলা), কিশোরগঞ্জ।
ফোন : ০১৭১১-১৮৯৭৬১, ০১৭১১-৩২৪৬৬০, ০১৭৩২-১৬৩১৫৭।
ই-মেইল: news@ghatanaprobaha.com, ওয়েবঃ- www.ghatanaprobaha.com
ডিজাইন: একুশে