কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
সংসারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে মালয়েশিয়া গিয়ে প্রাণ হারিয়ে লাশ হয়ে ফিরল মিজানুর রহমান (২২) নামে কটিয়াদীরের এক যুবক। মৃত্যুর ১৩ দিন পর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টায় হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্ধরে তার লাশ এসে পৌঁছে। সকাল ১১টায় জানাযা শেষে পারিবারিক কবর স্থানে তাকে দাফন করা হয়। মিজান কটিয়াদী পৌরসভার কামারকোনা মহল্লার মো. সিরাজুল ইসলামের পুত্র। গত ২৯ মে শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সকাল ১০ টায় মালয়েশিয়ার পেনাং শহরে একটি কারখানায় কর্মরত অবস্থায় দূর্ঘটনায় প্রাণ হারায় মিজান।
নিহত মিজানুর রহমানের পিতা সিরাজুল ইসলাম জানান, গত ২৯ মে শুক্রবার মালয়েশিয়ার পেনাং শহরে এক কারখানায় কর্মরত অবস্থায় ফোরকিপ দিয়ে উপর হতে মালামাল নামানোর সময় একটি বোর্ড ফসকে তার উপর পড়ে যায়। ফলে বোর্ডের নিচে চাপা পড়ে সে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছিল। আমার ৩ ছেলে ও ১ মেয়ের মাঝে মিজান ছিল সবার ছোট। সে ছিল সংসারে সকলের অত্যান্ত আদরের। কিন্তু আমার অভাবের সংসারে সকলের মুখে হাসি ফোটাতে ২০১৮ সালের প্রথম দিকে তাকে মালয়েশিয়ায় পাঠায়। মালয়েশিয়া গিয়ে সে কোন সুবিধা করতে পারেনি। তাকে পাঠানোর সময় ঋণ করা ৫ ল টাকার বুঝা আমি এখনো বয়ে বেড়াচ্ছি। সে প্রতিদিনই আমাদের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলতো। মিজান মৃত্যুবরণের দিন সকাল সাড়ে ৯ টার সময় আমি এবং তার মায়ের সাথে কথা বলেছে। তার সাথে মোবাইলে কথা বলার আধা ঘন্টা পর মালয়েশিয়া প্রবাসী তার খালাতো ভাই ইসমাঈল ফোন করে জানায় ফ্যাক্টরিতে কাজ করার সময় উপর হতে একটি বোর্ড পড়ে তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলই সে মারা যায়। সংবাদটি শুনে বাড়ির সকলেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। ঐদিন থেকেই তার মায়ের আহাজারি কোন মতেই থামানো যাচ্ছেনা। আজ তার লাশটি পেয়ে শেষ বারের মত মিজানের মুখখানা দেখতে পেরে বাবা হিসাবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়সহ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি ।