ফ.হ জোয়ারদার আলমগীরঃ
নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার খিদিরপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামে খাদ্য সংকটে থাকা বসবাসরত বানরের দল খাবার পেল। বৃহস্পতিবার সকালে মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাফিয়া আক্তার শিমু অভুক্ত বানরদের জন্য খাবার নিয়ে গেলেন রামপুর গ্রামে। নিজ হাতে কিছু বানরের মুখে তুলে দেন কলা ও বিভিন্ন রকমের খাবার। বানরদের জন্য নিয়মিত খাবারের ব্যবস্থা ও করে আসেন তিনি। এখানে খাদ্য সংকটে পড়েছে কয়েক হাজার বানর। এসব প্রাণীর দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সারা দেশে চলছে সরকার ঘোষিত অবরোধ। বন্ধ রয়েছে অফিস-আদালত, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির মেলবন্ধনের অন্যতম অনুষঙ্গ রামপুর গ্রামে বসবাসরত বানরের দল। উন্মুক্ত অবস্থায় কয়েক হাজার বানর রয়েছে এখানে । গাছপালা, জঙ্গল, নদী-নালার কারণে এ অঞ্চলে বানরের বসবাস। তবে জনবসতি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য সংকটের কারণে কমতে থাকে বানরের সংখ্যা। রামপুর গ্রামে বানর এখনো তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। তবে বসবাসের স্থান ও সাম্প্রতিক তীব্র খাদ্যাভাবের কারণে এর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। রামপুর গ্রামের গৃহবধু মর্জিনা এমদাদ জানান, বর্তমানে খাবার সংকটের কারণে বানর মানুষের বাড়ির খাবার নিয়ে যায়। অনেকে সময় অভুক্ত থাকছে বানর। ফলে খাবার না পেয়ে মানুষকে কামড় দিতে তেড়ে আসে। সাম্প্রতিক সময়ে খাবারের তীব্র সংকট থাকায় এসব প্রাণীর দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। সরকারি ভাবে বানর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়ে এলাকার ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে। যদি একটি নির্দিষ্ট স্থানে বানরের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করে তাহলে বানর সেখানে আবাস গড়ে তুলবে। পাশাপাশি অভুক্ত থাকবে না। মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাফিয়া আক্তার শিমু বলেন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য হচ্ছে এর বৈচিত্র্যময়তা। সৌরজগতের অন্যান্য যে কোন গ্রহ নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে এই বিপুলা পৃথিবী অসম্ভব ব্যতিক্রম ও এর সৌষ্ঠব সুনিপুণ। প্রাণের অস্তিত্ব সৌন্দর্যের প্রগাঢ়তা বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছে।পৃথিবীর প্রত্যেকটি প্রাণ অতীব মূল্যবান। একটি আরেকটির সাথে সম্পর্কযুক্ত। একটির অস্তিত্ব বিলীন হলে পুরো বাস্তুতন্ত্রই হুমকির মুখে পড়ে। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ যেমন কষ্টে আছে ঠিক একইভাবে কষ্টে আছে প্রাণীকূল। মনোহরদীর রামপুর প্রাকৃতিকভাবে বানরের বসবাসের এক অভয়ারণ্য। অসংখ্য বানর সেখানে। আগে সারাদিন ঘুরে বেড়াতো বাজার,মাঠে,মানুষের বাড়ির আংগিনায়।সকালে রুটিরুজির সন্ধানে বের হতো। আবার আহার পেলে চলে যেত বাসস্থানে। রামপুর অঞ্চলের মানুষও সানন্দে তাদেরকে সাথে নিয়েই বাস করতো। কিন্তু গত একমাস ধরে কালো মেঘের ছায়া পড়েছে তাদের আকাশেও। সেই তাড়না আর তাগিদ থেকেই নরসিংদী জেলার সম্মানিত জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন স্যারের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে আজ খিদিরপুর ইউনিয়নের রামপুর এলাকায় বানরদের খাবার প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া নিয়মিত ভিত্তিতে তারা যেন আহার পায় সে ব্যবস্থাও করা হয়েছে।