logo

মনোহরদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান বালু উত্তোলনকারী চক্রকে ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড

দেলোয়ার হোসেন শরীফ : গতকাল বুধবার মনোহরদী উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের গাংকুলকান্দি ও চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের চন্দনপুর গ্রামে পৃথক অভিযান চালিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনকারী চক্রের ৫ সদস্যকে ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেছে মনোহরদী উপজেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ শামীম কিবরিয়া। জানা গেছে, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে মনোহরদীর লেবুতলা, খিদিরপুর, চালাকচর, চরমান্দালিয়া ও চন্দনবাড়ি ইউনিয়নে এই সংঘবদ্ধ চক্রটি দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রয় করার অভিযোগ রয়েছে। বুধবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের গাংকুলকান্দি গ্রামে বালু উত্তোলনের সময় একই গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে মো. সুমন মিয়াকে ৭৫ হাজার, শাহাবুদ্দিনের ছেলে মো. আদমকে ৭৫ হাজার, ছানাউল্লার ছেলে ফজলুর রহমানকে ৭৫ হাজার, লাল মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলামকে ৭৫ হাজার ও চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের চন্দনপুর গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে বালু ক্রেতা বিল্লাল হোসেনকে ৬৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর অধিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ শামীম কিবরিয়া এ দণ্ডাদেশ প্রদান করে তা আদায় করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ৭-৮ বছর ধরে বালু উত্তোলন করলেও কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় নি। চক্রটি একটি শ্যালো যন্ত্র বসিয়ে পাইপ লাগিয়ে বালু উত্তোলন করছে দেদারছে। প্রতিদিন এ স্থান থেকে গড়ে ৪০-৫০ ট্রাক বালু উত্তোলন করা হয় বলে স্থানীয় মানুষ জানিয়েছেন। অথচ ২০১০ সালের বালুমহাল আইনে বলা আছে, বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান, চা-বাগানের ছড়া বা নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। এছাড়াও সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারাজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ। বালু উত্তোলনের ফলে মনোহরদীর গাংকুলকান্দি, রামপুর, পীরপুর, খিদিরপুর, ড্রেনেরঘাট, শিমুলতলী, মনতলা, চালাকচর, নয়াপাড়া সহ আশপাশ এলাকা হুমকির সম্মূখিন হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী সূত্র জানায়, বালু উত্তোলনের ব্যবসা বন্ধের জন্য এলাকাবাসী বিগত সময়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে জানালে প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করেন। এতে করে কয়েকদিন বালু উত্তোলন বন্ধ থাকলেও পরে সুযোগ বুঝে তা আবার চালু করা হয়। এলাকাবাসী আরো জানিয়েছে বহিরাগত ও এলাকার কিছু ব্যক্তি প্রভাব বিস্তার করে অবৈধভাবে মনোহরদীর রামপুরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী ও ফসলি জমির পাশে বিরাট গর্ত করে শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছেন। এ কারণে হুমকির মুখে পড়েছে নদীর তীরবর্তী ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এলাকাবাসী আরো জানিয়েছে, বর্তমান মনোহরদী উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতার কারণে অনেকাংশেই কমে এসেছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রবণতা। এলাকাবাসী মনে করেন বালু উত্তোলনের উপর ভ্রাম্যমাণ আদালতের চলমান অভিযান অব্যাহত থাকলে খুব শিঘ্রই মনোহরদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হবে। মনোহরদী উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে অবৈধভাবে উত্তোলনকৃত বালু জব্দ করা হয়েছে। যা পরবর্তীতে উন্মুক্ত নিলাম ডাকের মাধ্যমে বিক্রয় করে এর অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা করা হবে। এছাড়াও আদায়কৃত ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা ইতোমধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে।

Comments are closed.







প্রধান সম্পাদক : ফজলুল হক জোয়ারদার আলমগীর, সহ-সম্পাদক : দেলোয়ার হোসেন শরীফ।
বার্তা সম্পাদক - মাসুম পাঠান, প্রধান কার্যালয়: ১৩/এ মনেশ্বর রোড, হাজারিবাগ, ঢাকা- বাংলাদেশ।
জোনাল অফিস: বাংলাদেশ কম্পিউটার এন্ড টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট, কটিয়াদী বাজার (অগ্রনী ব্যাংক নিচতলা), কিশোরগঞ্জ।
ফোন : ০১৭১১-১৮৯৭৬১, ০১৭১১-৩২৪৬৬০, ০১৭৩২-১৬৩১৫৭।
ই-মেইল: news@ghatanaprobaha.com, ওয়েবঃ- www.ghatanaprobaha.com
ডিজাইন: একুশে