logo

ভাত না খেয়ে ২০ বছর পার করলেন কাওছার


ফজলুল হক জোয়ারদার আলমগীর
ভাত বাঙালীর প্রধান খাদ্য। লোকজন যেখানে ভাত খেয়ে বেঁচে থাকে , সেখানে জন্মের পর থেকে ২০ বছর পার হলেও এ পর্যন্ত ভাত না খেয়েই দিব্যি জীবনযাপন করছেন কাওছার আহম্মেদ নামে এক যুবক।
কাওছার আহম্মেদের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের দক্ষিণ পূর্বচর পাড়াতলা গ্রামে। বাবা মো. আফাজ উদ্দিন এবং মা মোমেনা খাতুন। চার ভাই ও তিন বোনের মাঝে কাওছার সকলের ছোট। কাওছার বর্তমানে নরসিংদী সরকারি কলেজে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স ১ম বর্ষে অধ্যয়ন করছেন।

আর সবার মতো সুস্থ এবং স্বাভাবিকভাবেই তার জন্ম। জন্মের পর তার কোনো সমস্যাই ছিলো না। সমস্যা শুরু ছয় মাস বয়সে প্রথম ‘মুখে ভাত’ দেয়ার সময় । শিশু কাওছারের মুখে প্রথমবার ভাত দিতেই কান্নাকাটি শুরু করে দেয় এবং বমি করে ফেলে।
পরিবারের লোকজন ভাবে আরেকটু বড় হোক তখন ভাত খাওয়ানো যাবে। দুই বছর পর্যন্ত শুধু মায়ের বুকের দুধ খেয়েই বড় হয় সে। এরপর তাকে আবার ভাত খাওয়ানোর চেষ্টা শুরু করে পরিবারের লোকজন। কিন্তু তখনো সে ভাত খেতে চায় না। জোর করে ভাত খাওয়াতে গেলেই বমি করে দেয়। এরপর থেকে পরিবারের কেউ আর তাকে জোর করে ভাত খাওয়ানোর তেমন একটা চেষ্টা করেনি।

ভাতের বিকল্পে তাকে সুজি খাওয়ানো শুরু করা হয়। ৫-৬ বছর পর্যন্ত শুধু সুজি খেয়েই পার করে সে। এদিকে বয়স যত বাড়ছে, খাবারের চাহিদাও বাড়ছিল তার। সেজন্য তখন থেকে সুজির বদলে তাকে রুটি, দুধ, কলা, চিড়া, সেমাই খেতে থাকে।
কাওছার আহম্মেদের মা মোমেনা খাতুন ঘটনাপ্রবাহকে জানান, তার জন্মের ৬ মাস পর চাল দিয়ে রান্না করে নরম খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। ভাত খেতে না চাইলে তাকে মারধোর করে ও কোন লাভ হয়নি। বর্তমানে তার বয়স ২০ বছর পার হলেও এত বছর বয়সে সে একবার ও ভাত খায়নি। রুটি, বিস্কুট, ফলসহ অন্যান্য খাবার খেয়ে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে । অবশেষে তাকে তার মতো করেই খেতে দেওয়া হয়। তার যা ভালো লাগে, তা সে খায়। দেখতে দেখতে এখন সেই ছোট্ট ছেলেটি এখন ২০ বছরের যুবক।
কাওছার আহম্মেদ জানান, ভাত দেখলেই আমার খারাপ লাগে। রুটি আমার প্রধান খাবার। এতেই আমি সাচ্ছন্দবোধ করি। আমি নিয়মিত ব্যায়াম করি। আমার স্বাস্থ্য ভাল , শরীরে কোন সমস্যা নেই।

নারায়নগঞ্জের সাবেক সিভিল সার্জন ও মনোরোগ বিশষজ্ঞ ডা. মো. আতিকুল সারোয়ার ঘটনাপ্রবাহকে জানান, ভাত খেতে না পারাটা কোন রোগ নয়। ভাতের পরিবর্তে সে রুটি ও অন্যান্য খাবার খাচ্ছে। তাকে তার মতো করেই খেতে দেয়া উচিত। তার যা ভালো লাগে, সে তা ই খাবে। পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই ভাত খায়না। তাতে তাদের তো কোন অসুবিধা হয়না।

Comments are closed.







প্রধান সম্পাদক : ফজলুল হক জোয়ারদার আলমগীর, সহ-সম্পাদক : দেলোয়ার হোসেন শরীফ।
বার্তা সম্পাদক - মাসুম পাঠান, প্রধান কার্যালয়: ১৩/এ মনেশ্বর রোড, হাজারিবাগ, ঢাকা- বাংলাদেশ।
জোনাল অফিস: বাংলাদেশ কম্পিউটার এন্ড টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট, কটিয়াদী বাজার (অগ্রনী ব্যাংক নিচতলা), কিশোরগঞ্জ।
ফোন : ০১৭১১-১৮৯৭৬১, ০১৭১১-৩২৪৬৬০, ০১৭৩২-১৬৩১৫৭।
ই-মেইল: news@ghatanaprobaha.com, ওয়েবঃ- www.ghatanaprobaha.com
ডিজাইন: একুশে