মো. আবু নাঈম, কটিয়াদী থেকে
ছেলের ভয়ে পালিয়ে বাড়ির বাইরে রাত যাপন করতেন কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীর নিদান মিয়া (৫০) নামে এক বাবা। কিন্তু খবর পেয়ে রাতের বেলা সেখানে গিয়েই তাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে তার ছেলে।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কটিয়াদী পৌরসভার দড়িচরিয়াকোনা মহল্লায়। গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে রাত পৌনে ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
শনিবার সকালে এলাকাবাসী ঘাতক পুত্র মাদকাসক্ত হৃদয় মিয়াকে (২৫) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছেন।
নিহত নিদান মিয়ার ছোট ভাই মো. রতন মিয়া বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমার ভাই নিদান মিয়া চরিয়াকোনা স্বনির্ভর বাজার থেকে প্রতিশ্রুতি কিন্ডারগার্ডেন স্কুলে রাত্রি যাপনের জন্য ফিরছিলেন। পথে রাস্তায় ওঁৎ পেতে থাকা হৃদয় মিয়া ধারালো দা দিয়ে মাথাসহ সারা শরীরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়।
সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য প্রথমে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে বাজিতপুরের জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেলে সেখানে তার অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রাত পৌনে চারটার দিকে তিনি মারা যান।
ভাইয়ের হত্যাকারী ঘাতক হৃদয় মিয়া মাদকাসক্ত ও উশৃংখল প্রকৃতির ছিল। সে তার মা-বাবাকে কখনো ভরণপোষণ দিত না। টাকার জন্য সে সবসময় তার মা-বাবাকে অত্যাচার করত। ঘটনার বেশ কিছুদিন পূর্ব থেকে সে তার বাবাকে হত্যা করার হুমকি দিয়ে আসছিল। এ কারণে আমার ভাই নিদান মিয়া বাড়িতে থাকত না। তিনি চরিয়াকোনা প্রতিশ্রুতি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে গোপনে রাত্রি যাপন করতেন। সেই স্কুলেই ফিরছিলেন নিদান মিয়া।
আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে ঘাতক হৃদয় মিয়াকে আসামি করে কটিয়াদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি।
কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এসএম শাহাদত হোসেন জানান, আটক হৃদয় মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার পিতাকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে।