কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জ সদর সাব-রেজিস্ট্রারকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করছেন দলিল লেখকরা।
এই দাবিতে মঙ্গলবার সদর উপজেলা দলিল লেখক সমিতি মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। সোমবার থেকে তারা কাজ বন্ধ রেখেছেন।
তারা সাব-রেজিস্ট্রার এম নফিয বিন যামানের শাস্তি এবং তার করা মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে, কাজকর্ম বন্ধ রেখে দলিল লেখকরা আন্দোলনে থাকায় মঙ্গলবার সেবা প্রত্যাশী লোকজনকে ফিরে যেতে দেখা গেছে।
সোমবার সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার এম নফিয বিন যামান বাদী হয়ে জেলা দলিল লেখক সমিতি সভাপতি মহিউদ্দিন বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক ফোরকান উদ্দিন মানিকসহ ১৩ জন দলিল লেখককে আসামি করে সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় তিনি অফিসের ভেতরে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, জেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক ফোরকান উদ্দিন মানিক সোমবার দুপুরে এম নফিয বিন যামানের কাছে একটি দলিল নিয়ে যান স্বাক্ষর করানোর জন্য। কিন্তু দলিলটি ক্রুটিপূর্ণ থাকায় তিনি স্বাক্ষরে অস্বীকৃতি জানালে মহিউদ্দিন ও ফোরকানসহ অন্যরা তার উপর হামলা চালান।
সদর মডেল থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এখনও কোনো আসামিকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে অভিযান অব্যাহত আছে।
এদিকে, মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মঙ্গলবারের মানববন্ধনে বক্তব্য রাখে সদর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সহ-সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক, সহ-সাধারণ সম্পাদক কমল সরকার, দলিল লেখক আব্দুর রাজ্জাক, লুৎফুর রহমান, আবুল হাশেম, মোস্তফা কামাল, আলমগীর হোসেন, মকবুল হোসেন, ফারুক আহাম্মদ বাবু প্রমুখ।
বক্তারা দলিল লেখকদের বিরুদ্ধে মামলাকে ‘মিথ্যা’ অভিহিত করে তা প্রত্যাহার এবং সাব-রেজিস্ট্রারকে ‘দুর্নীতিবাজ’ আখ্যায়িত করে তার শাস্তি দাবি করেন।
জেলা দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফোরকান উদ্দিন মানিক বলেন, সাব-রেজিস্ট্রারের অনৈতিক আচরণ কারণেই এ হাঙ্গামা হয়েছে।
তিনি বলেন, “দলিল লেখকদের কাছে দলিল পিছু তিন হাজার টাকা করে ঘুষ দাবি করেন এই কর্মকর্তা। আর এতেই সমিতির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়।”
এ ব্যাপারে সাব-রেজিস্ট্রার এম নফিয বিন যামান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “বহুদিন ধরে এ অফিসে সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে সরকারি ফির চেয়ে বেশি টাকা আদায় করে আসছিল দলিল লেখকরা। ত্রুটিপূর্ণ দলিলে স্বাক্ষর না করাসহ সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তারা আমার ওপর হামলা চালায়।”
জেলা রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ আবু তালেব জানান, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখছে। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।