নজরুল ইসলাম খায়রুল, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হাওড় বেষ্টিত কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার কাকুরিয়া গ্রামের বন্যা প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণের কিছুদিন যেতে না যেতেই ভেঙ্গে যাচ্ছে । ইতিমধ্যে বর্ষার পানি ও ঢেউয়ের আঘাতে বাড়ি-ঘর ভাঙ্গতে শুরু করেছে। কেউ কেউ বাঁশের খুঁটি ও কুঁচরিপানা দিয়ে বাড়ি ঘর রক্ষার চেষ্টা করছে। গ্রামবাসী প্রতিটি মুর্হুত আতংক উৎকষ্ঠায় দিন পার করছেন। স্থানীয় এলাকাবাসী ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-২০১৫ অর্থ বৎসরে হাওড় অবকাঠামো ও জীবনমান উন্নয়ন (হিলিপ) এ প্রকল্পে ৫৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে কাজ শুরু করে। প্রকল্পের উপকারভোগী কলমা ইউনিয়নের কাকুরিয়া গ্রামে ২ শ ১০টি পরিবার এবং বন্যা প্রতিরক্ষা দেয়াল যাদের বাড়ি ঘর দিয়ে তৈরি করে এমন পরিবারের সংখ্যা ১৪০টি। গ্রামের লোক ৮০ ভাগ দরিদ্র ও ২০ ভাগ নিম্ন মধ্যবিত্ত সংখ্যা গরিষ্ট মানুষ ক্ষেত মজুর ও জেলে। কিন্তু বর্ষার পানি আশার সাথে সাথেই এ প্রতিরক্ষা দেয়াল ভাঙ্গন শুরু হয়। গত তিন চার দিনের বর্ষণে ভাঙ্গন বেড়ে গেছে। আর তাই বাঁশের খুটি ও কুচুরীপনা দিয়ে নতুন করে কাঁচা প্রতিরক্ষা দেয়াল তৈরী করে বাড়ি-ঘর রক্ষার চেষ্টা করছে গ্রামবাসী। স্থানীয় এলাকাবাসী অতি দরিদ্র বিধবা শেফালী রানী, হীরা লালা দাস, ব্রজেন্দ্র দাস, অজিত দাস জানান তারা বাঁশের খুঁটি দিয়ে কাঁচা প্রতিরক্ষা দেয়াল তৈরী করার আর্থিক ক্ষমতা নেই। কার্তিক দাস, অমৃত দাস, অনিল সরকার, বিশ্বেম্বর জানান, আমরা ঋণ করে প্রতিরক্ষা দেয়াল সংযোগ স্থানে মাটি ভরাট করেছি। সুভাষ দাস, ঔষর দাস জানান, আমরা ত্রিমূখী ক্ষতিগ্রস্ত। একদিকে অনেকেই আগে ব্যবহারের ইট বিক্রি করে দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত মাটি ভরাট করে প্রচুর টাকা মহাজনের ঋণের জালে আবদ্ধ হয়ে পড়েছেন। তৃতীয়ত হিলিফের টাকার কোন ফল পাননি। চতুর্থত বাড়ী-ঘর রক্ষা করার জন্য বর্তমানে বাঁশ ও অন্যান্য দ্রব পাওয়া যায় না। তাই ঝড় আসলে স্ত্রী-সন্তান, গবাদি পশু নিয়ে বাঁচার আর কোন পথ নাই। উক্ত প্রতিরক্ষা দেয়াল প্রকল্প কমিটির সভাপতি হরিলাল দাস এসব বিষয়ের সত্যতা স্বীকার করেন। কলমা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য ও গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা রাধাকৃষ্ণ দাস জানান, বন্টক সিস্টেমের প্রতিরক্ষা দেয়ালের জন্য প্রযোজ্য নয়। এখানে ভীমসহ আরসিসি প্রতিরক্ষা দেয়াল তৈরী অথবা ইটের গাঁথুনী তৈরী করা হলে দীর্ঘস্থায়ী হবে। কলমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাধন চন্দ্র দাস জানান, হিলিপের ভুল ইস্টিমিট এবং একরোখা তদারকির ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু গ্রামবাসী অধিকাংশ লোকজনের ভাষ্যমতে ইস্টিমিট জটিলতা অনিয়মের সাথে দুর্নীতি ফসল এ প্রতিরক্ষা দেয়াল । হিলিপ ও জনগনের ৭০ লক্ষ টাকা খরচ করে ভরাটের পরও বৎসরের মধ্যে ভেঙ্গে গেছে এ প্রতিরক্ষা দেয়াল । এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মাহাবুব মোর্শেদ জানান, এই প্রতিরক্ষা দেয়াল বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাবেনা,পরে এই বিষয়ে বলবেন বলে জানান তিনি।
অষ্টগ্রামে বন্যা প্রতিরক্ষা দেয়াল ভাঙ্গনে আতংকে ও উৎকন্ঠায় গ্রামবাসী
প্রকাশ : Aug 04, 2016 | Comments Off on অষ্টগ্রামে বন্যা প্রতিরক্ষা দেয়াল ভাঙ্গনে আতংকে ও উৎকন্ঠায় গ্রামবাসী
