logo

ফের রিমান্ডে হাসনাত ও তাহমিদ গুলশান মামলায় প্রথম গ্রেফতার হাসনাত

ঘটনা প্রবাহ ডেস্ক:

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রথম আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজাউল করিমকে। শনিবার এ মামলায় তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে বিচারক ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে হাসনাতের সঙ্গে উদ্ধার হওয়া কানাডার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তাহমিদ হাসিব খানকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়নি। শনিবার তাকে ৫৪ ধারার মামলায় আরও ৬ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

এর আগে ৪ আগস্ট হাসনাত করিম ও তাহমিদকে সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় গ্রেফতারের কথা জানায় পুলিশ। তাদের দু’জনকেই এ ধারায় ৮ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

শনিবার দুপুরে ৮ দিনের রিমান্ড শেষে হাসনাত রেজাউল করিম ও তাহমিদ হাসিব খানকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির। এ সময় হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় হাসনাত করিমকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক হুমায়ুন কবির দাখিল করা প্রতিবেদনে আদালতকে জানান, ৫৪ ধারায় গ্রেফতারের পর রিমান্ডে থাকা হাসনাত করিম উল্লেখযোগ্য তথ্য দিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদে হলি আর্টিজানে হামলার ঘটনায় হাসনাত করিমের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ওই ঘটনার সঙ্গে তার সাবেক ছাত্ররা জড়িত। হাসনাত করিমকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন জানিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা ফের ১০ দিনের রিমান্ড চান। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম এমদাদুল হক ৮ দিন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

অন্যদিকে ৫৪ ধারায় ৮ দিনের রিমান্ড শেষে শনিবার তাহমিদকে আদালতে হাজির করে ৭ দিন রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি চায় পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম গোলাম নবী ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গুলশান হামলায় হাসনাত করিমের এক সময়ের কর্মস্থল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিবরাজ ইসলামের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে। ১ জুলাই ওই হামলার পরদিন সকালে কমান্ডো অভিযানে এক সন্দেহভাজনসহ ৬ জঙ্গি নিহত হয়। এর মধ্যে নিবরাজ ইসলামও রয়েছে। এছাড়া জঙ্গি হামলার সময় হলি আর্টিজানের সিসি ক্যামেরা ও পাশের ভবন থেকে এক কোরিয়ান নাগরিকের ধারণ করা কিছু ভিডিওতে হাসনাত করিম ও তাহমিদ হাসিবের গতিবিধি সন্দেহের উদ্রেক ঘটায়। হলি আর্টিজান থেকে উদ্ধার হওয়া ১৩ জনসহ ৩২ জনকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ ও যাচাই-বাছাই করে তাদের অনেককে ছেড়ে দেয়া হলেও পরিবারের পক্ষ থেকে হাসনাত ও তাহমিদকে বারবার ফিরে না পাওয়ার কথা জানানো হয়। যদিও পুলিশ প্রথম থেকেই এ দু’জনের ব্যাপারে নীরবতা পালন করে। মিডিয়ার পক্ষ থেকে হাসনাত ও তাহমিদের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও কোনো উত্তর দেননি তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ২০১২ সালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাকরি থেকে হাসনাত করিমকে অব্যাহতি দিয়েছিল।

তবে হাসনাত করিম গুলশান হামলার ঘটনায় জড়িত নন দাবি করে তার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘মেয়ের জন্মদিন উদযাপনে ওই দিন সপরিবারে হলি আর্টিজানে গিয়েছিলেন হাসনাত।’ প্রায় এক মাস পর পুলিশ মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাসনাত করিম ‘সন্দেহমুক্ত নন’ বলে উল্লেখ করেন। এরপর ৪ আগস্ট পুলিশ হাসনাত করিম ও তাহমিদকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখায়। পরে তাদের দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮ দিন করে রিমান্ডে নেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, ১ জুলাই রাতে রাজধানীর কূটনৈতিক জোন গুলশানের ২ নম্বর সার্কেলের ৭৯ নম্বর সড়কে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা, ১৭ বিদেশী নাগরিক ও তিন বাংলাদেশী নিহত হন। পরে সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে পরিচালিত কমান্ডো অভিযানে ছয় জঙ্গি নিহত হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। নিহতদের মধ্যে ৯ জন ইতালির, ৭ জন জাপানের ও একজন ভারতের নাগরিক। তিন বাংলাদেশীর মধ্যে একজনের যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিকত্বও ছিল।

Comments are closed.







প্রধান সম্পাদক : ফজলুল হক জোয়ারদার আলমগীর, সহ-সম্পাদক : দেলোয়ার হোসেন শরীফ।
বার্তা সম্পাদক - মাসুম পাঠান, প্রধান কার্যালয়: ১৩/এ মনেশ্বর রোড, হাজারিবাগ, ঢাকা- বাংলাদেশ।
জোনাল অফিস: বাংলাদেশ কম্পিউটার এন্ড টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট, কটিয়াদী বাজার (অগ্রনী ব্যাংক নিচতলা), কিশোরগঞ্জ।
ফোন : ০১৭১১-১৮৯৭৬১, ০১৭১১-৩২৪৬৬০, ০১৭৩২-১৬৩১৫৭।
ই-মেইল: news@ghatanaprobaha.com, ওয়েবঃ- www.ghatanaprobaha.com
ডিজাইন: একুশে