মো. রফিকুল ইসলাম, পাকুন্দিয়া থেকে
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বিষমুক্ত লাউ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। অল্প খরচে বিষমুক্ত ও নিরাপদ লাউ চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। এতে লাউ চাষের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ দিনদিন বাড়ছে। লাউ শীতকালীন সবজি হলেও বছর জুড়েই লাউ চাষ করছেন এখানকার চাষিরা। কৃষকরা ভালো দামে বিক্র করতে পেরে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার একটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়নের প্রায় সব এলাকাতেই কম-বেশি লাউয়ের চাষ হয়ে থাকে। তবে জাঙ্গালিয়া, চরফরাদী, সুখিয়া, এগারসিন্দুর ও বুরুদিয়া ইউনিয়নে লাউয়ের আবাদটা একটু বেশি হয়ে থাকে। এবছর প্রায় ৭০ হেক্টর জমিতে লাউয়ের চাষ হয়েছে।
কীটনাশকের পরিবর্তে ফেরোমেন ট্র্যাপ ও ইয়েলো কালার ট্র্যাপ ব্যবহার করে নিরাপদ ও বিষমুক্ত লাউ চাষ করছেন এখানকার চাষিরা। তাছাড়া রাসায়নিক সারের পরিবর্তে কেঁচো সার ব্যবহার করে জৈব উপায়ে সুস্থ ও ভালো আকৃতির সুস্বাদু লাউয়ের আবাদ হচ্ছে। এতে সম্পূর্ণ বিষমুক্ত ও নিরাপদ সবজি পাচ্ছেন ক্রেতারা।
সরজমিনে উপজেলার দাওরাইট, আঙিয়াদী ও খামা গ্রামের কয়েকটি লাউ ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, মাচায় দুলছে শত শত লাউ। ডগায় ডগায় লাউ ধরেছে। ডগায় লাউয়ের কুড়িঁ ধরে আছে থরে থরে। চাষিরা তাদের লাউ ক্ষেতের পরিচর্যা করছেন। কেউবা আবার লাউ কাটছেন বিক্রির জন্য।
সুখিয়া গ্রামের শাহানশাহ্ ও আবুল হাসিম বুলবুল জানান, কীটনাশক ব্যবহার না করে ফেরোমন ট্র্যাপ ও ইয়েলো ট্র্যাপ ব্যবহার করে বিষমুক্ত লাউ চাষ করেছেন। তাছাড়া কেঁচো সার ব্যবহার করায় লাউয়ের ভালো ফলন হয়েছে। দেখতে সুন্দর ও সুস্বাদু হওয়ায় আশপাশের লোকজন জমি থেকেই লাউ কিনে নিচ্ছেন। প্রতিটি লাউ ৩০ থেকে ৩৫টাকা দরে বিক্রি করছেন। পুরো লাউ বিক্রি করে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হবেন বলে জানান।
খামা গ্রামের কৃষক ইকবাল সাফওয়ান ও ফুল বানু বলেন, ১০শতক জমিতে লাউ চাষ করেছি। এতে আমার খরচ হয়েছে দুই হাজার টাকা। ইতোমধ্যে ছয় হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছি। আরও কয়েক হাজার টাকা বেচতে পারব বলে আশা করছি। এতে আমি বেশ লাভবান হয়েছি।
উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হামিমুল হক সোহাগ জানান, অল্প খরচে লাউ চাষ করে বাড়তি আয় করছেন চাষিরা। এতে তারা বেশ লাভবান হচ্ছেন। লাউসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি নিরাপদ উপায়ে চাষাবাদ করতে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।