ঘটনাপ্রবাহ ডেস্কঃ
রোববার নতুন করে করোনা সংক্রমণ সনাক্তের তালিকায় কুলিয়ারচর উপজেলায় ২২জন, ভৈরব উপজেলায় ১৫জন, কটিয়াদী উপজেলায় ১৪ জন, সদর উপজেলায় ৮জন, হোসেনপুর উপজেলায় ৩জন, করিমগঞ্জ উপজেলায় ২জন, পাকুন্দিয়া উপজেলায় ৪জন, ও মিঠামইন উপজেলায় উপজেলায় ১জন রয়েছেন।
৮ ও ৯ জুন সংগৃহীত ২৭৬ জনের নমুনার মধ্যে ৬৯ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। এসব নমুনা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। রোববার রাতে এ রিপোর্ট পাওয়া যায়।
এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত মোট ৯৪৮ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে।
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ও কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান রোববার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব সিভিল ডা. মো. মুজিবুর রহমান এবং কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সৈয়দ মঞ্জুরুল হকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ব্যাপক হারে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের কারণে জ্যামিতিক হারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
এ সময় তারা বলেন, করোনা উপসর্গ গোপন করা লোকজনের সংস্পর্শে গিয়ে বিপুল সংখ্যক ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মী, প্রশাসনের কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরাও আক্রান্ত হয়ে পড়ে।
কোভিড-১৯ পজেটিভ অনেক লোকজন স্বাস্থ্য বিধি এবং আইসোলেশন কিংবা হোম কোয়ারেন্টিন না মেনে অবাধে বিচরণ করার অভিযোগ উঠেছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।
এ কারণে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি আর-ও বাড়ছে। এ ধরনের রোগীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মুজিবুর রহমান।
তবে, এদের অধিকাংশই ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
আর এ সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত কিশোরগঞ্জ জেলার উপজেলা ভিত্তিক এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে, সদর উপজেলার ১৫৩ জন, হোসেনপুর উপজেলার ২১জন, করিমগঞ্জ উপজেলায় ৬৭ জন, তাড়াইল উপজেলায় ৬২ জন, পাকুন্দিয়ায় উপজেলায় ৪৪ জন, কটিয়াদী উপজেলায় ৫১ জন, কুলিয়ারচর উপজেলায় ৫৯ জন, ভৈরব উপজেলায় ৩৬৪ জন, নিকলী উপজেলায় ১৪জন, বাজিতপুর উপজেলায় ৫৭ জন, ইটনা উপজেলায় ২৩ জন, মিঠামইন উপজেলায় ২৭ জন, ও অষ্টগ্রাম উপজেলায় ৬ জন।
আর এদের মধ্যে, তাড়াইল উপজেলায় দুই বছরের কোলের শিশুসহ এক পরিবারের ৪ জন, পাকুন্দিয়া উপজেলায় এক পরিবারের ৫ জন, বাজিতপুরে এক পরিবারের ৮ জন, ইটনাতে এক পরিনারের ৪ জন এবং ভৈরবে শিশুসহ এক পরিবারের ৭ সদস্য আক্রান্ত রয়েছেন।
এ ছাড়াও আক্রান্তদের তালিকায় ৪৬ জন ডাক্তার, ১৩ জন নার্স, ৫৮ জন স্বাস্থ্য কর্মী, পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য ১১ জন এবং ২ জন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যাণ্ড রয়েছেন।
সূত্রমতে, আক্রান্তদের মধ্যে ২৯৭ জন ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেছেন।
বাকিরা আইসোলেশন কিংবা হোম কোয়ারেন্টিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ছাড়া এ পর্যন্ত করোনা সংক্রমণের শিকার হয়ে এ জেলায় এক শিশুসহ ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সিভিল সার্জন জনাব মুজিবুর আরও জানান, পরিস্থিতি বিবেচনায় ইতিমধ্যেই জেলার সর্বাধিক করোনাক্রান্ত উপজেলা ভৈরবে লকডাউনের ন্যায় স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব রক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতের ব্যনস্থা করা হয়েছে।
তবে, সরকার নির্ধারিত রেড, ইয়ালো ও গ্রীণ জোনের কার্যক্রম শুরু এবং নির্দেশনা আসলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জেলার ভৈরব উপজেলাকে লকডাউনের আওতায় আনা হবে।
দ্বিতীয় ধাপে জলা সদরকে লকডাউনের আওতায় আনার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে বলে জানিয়েছেন জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান।