নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রী বিষপান করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার অবস্থার অবনতি ঘটলে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রাকিবুল আমিন বিজয় রোগীকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করে দেন। হাসপাতালে ২ টি এম্বুলেন্স থাকা সত্বেও সিএনজি কিংবা অন্য কোন যানবাহনে করে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। এ অবস্থায় অসুস্হ ছাত্রীটির অভিভাবক ছোটাছুটি করতে থাকে। এ সংবাদটি কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এমএ জলিল পাওয়ার সাথে সাথে তাঁর ব্যক্তিগত গাড়ীর চালককে ডেকে এনে এসআইকে দিয়ে গাড়ী পাঠিয়ে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগ হতে অসুস্হ ছাত্রীকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে ওসির মানবিক আচরনের মাধ্যমে অসুস্হ স্কুল ছাত্রীটির চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পৌঁছে দেয়ার জন্য অনেকেই প্রশংসা করতে থাকেন।
এ সময় কটিয়াদী মডেল থানায় আসা আব্দুল কুদ্দুস নামে এক ব্যক্তি ঘটনাপ্রবাহকে জানান বিষপানে অসুস্থ এক স্কুল ছাত্রী কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নেয়ার জন্য সরকারি এম্বুলেন্স না পেয়ে অন্যকোন যানবাহনের জন্য ছোটাছুটি করছে শুনে তিনি ( ওসি) তার অফিস থেকে বেড়িয়ে গিয়ে থানার গাড়ীর চালককে খোঁজতে থাকেন। চালক আসতে সামান্য বিলম্ব হওয়ায় তিনি যেন পাগলেরমত আচরন করতে থাকেন। এ সময় ওসির আচরন দেখে মনে হচ্ছিল রোগী তার কোন নিকটাত্মীয় হবে। অসুস্হ ছাত্রীটাকে কিশোরগঞ্জ পাঠানোর পর তিনি শান্ত হন। এমন মানবিক ভাল মনের পুলিশ অফিসার আমি কখনো দেখিনি। আল্লাহ যেন তার হায়াত বাড়িয়ে দেন।
বিষপানে মুমুর্ষ স্কুল ছাত্রীকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে
নেয়ার জন্য কেন সরকারি এম্বুলেন্স পেলনা এ বিষয়ে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানভীর হাসান ঘটনাপ্রবাহকে জানান কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোন সরকারি ড্রাইভার নেই। বাহির থেকে একজন চালক এসে প্রয়োজনীয় সময় কাজ করে থাকে। ফলে এম্বোলেন্স থাকলেও চালকের অভাবে রোগীর সেবা দিতে পারছিনা। আজ কিশোরগঞ্জে ডাক্তারদের একটি প্রশিক্ষণ থাকায় চালক আমাদেরকে নিয়ে আসে। আধা ঘন্টার মাঝেই সে কটিয়াদী চলে আসবে।
কটিয়াদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ এমএ জলিল ঘটনাপ্রবাহকে জানান, বিষপান করা এক মুমুর্ষ স্কুল ছাত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়ার জন্য এম্বুলেন্স না পেয়ে ছোটাছুটি করতে দেখে আমি তার জীবন বাঁচাতে আমার ব্যবহৃত গাড়িতে করে থানার এক এসআইসহ পুলিশ দিয়ে কিশোরগঞ্জ পৌঁছে দেয়। এটি আমার কর্তব্য বলে এ কাজটি করে। অসুস্থ স্কুল ছাত্রীটি যদি আমার মেয়ে হতো, তাহলে আমি কি করতাম? পুলিশ এখন মানবিক কাজের জন্য সারাদেশে মানুষের প্রশংসিত হচ্ছে।
জানাযায়, কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নে ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করে ২ দিন আটকে রেখে ধর্ষণের শিকার হলে ছাত্রীটি প্রতিবেশী লোকজন ও দরবারিদের অপবাদ সইতে না পেরে শুক্রবার সকালে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে । তাকে চিকিৎসার জন্য কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিতে হাসপাতালের সরকারি এম্বুলেন্স তাকে দেয়া হয়নি।