ফ.হ জোয়ারদার আলমগীরঃ
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার শামসুন্নাহার (৫৫) ও জামেলা খাতুন (৪০) দুই সংগ্রামী নারী। দু’ জনেরই স্বামীর কোন কর্মক্ষমতা নেই। সামান্য ভিটে বাড়ি ছাড়া কোন জমি নেই। পরিবারের লোকজনের মুখে দু’মুঠো খাবার তুলে দিতে মানুষের করোনার পাত্র না হয়ে বুকে সাহস নিয়ে নেমে পড়েন ব্যবসায়। কটিয়াদী উপজেলার মানিকখালী বাজারের আড়ৎ থেকে বাকিতে ডিম নিয়ে ট্রেনে প্রতিদিন চলে যান ভৈরবসহ বিভিন্ন বাজারে। সেখানে ডিম বিক্রি করে মহাজনের টাকা বুঝিয়ে দিয়ে লাভের টাকায় চাউল, ডাল নিয়ে বাড়ি ফিরেন। এভাবেই কোন রকমে চলছিল তাদের জীবন। কিন্তু আজ মহামারি করোনার প্রভাবে ট্রেন, বাস চলাচল ও হাট বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় থেমে গেছে তাদের ব্যবসা। স্বামী ও সন্তানদের মুখে খাবার যোগানো নিয়ে তারা এখন চিন্তিত। সরকারিভাবে কর্মহীন অতিদরিদ্র লোকজনকে সাহায্য প্রদান শুরু হলেও তারা কিছুই পাইনি। শামসুন্নাহার জানান তার বাড়ি উপজেলার চান্দপুর ইউনিয়নের দেবলেরকান্দা গ্রামে। স্বামী বাদল মিয়া দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ অসুস্থ। তিনি ৩ ছেলে ও ১ মেয়ের জননী। বড় ২ ছেলে বিয়ে করে পৃথক সংসার করছেন, মেয়েকে ও বিয়ে দিয়েছেন। ছোট ছেলটি প্রতিবন্ধী। অসুস্থ স্বামী ও প্রতিবন্ধী ছেলের চিকিৎসা ও সংসার চালাতে শামসুন্নাহার ২৫ বছর ধরে ডিম বিক্রি করেন। অপর ডিম বিক্রেতা জামেনা খাতুন জানান তার বাড়িও একই ইউনিয়নের পাঁচপাড়া গ্রামে। তার স্বামী মো. সাহাব উদ্দিন একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। তিনি ২ ছেলে ও ১ কন্যা সন্তানের জননী। ২০ বছর ধরে তিনিও ডিম বিক্রি করেন। যানবাহন ও হাট বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা এখন কোথাও যেতে পারছেননা। শত কষ্টের মাঝেও তারা কারোর কাছে হাত পাতেননি। শ্রম দিয়ে মাথার ঘামে শরীর ভিজিয়ে ব্যবসা করে সংসার চালাচ্ছেন। এখন কোথায় পাবেন তারা খাবারের টাকা? এ নিয়ে এখন ভীষণ চিন্তিত। সরকারি কোন সাহায্য সহযোগীতা কি তারা পাবে? ইহা তাদের জিজ্ঞাসা।
কটিয়াদীতে দুই সংগ্রামী নারী আজ জীবন যুদ্ধে পরাজিত!
প্রকাশ : Apr 05, 2020 | Comments Off on কটিয়াদীতে দুই সংগ্রামী নারী আজ জীবন যুদ্ধে পরাজিত!
